ঢাকা ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ ::
ইউস্যাফের ঈদ আয়োজন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বরকামতা ইউনিয়নবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানালেন আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগ নেতা কালীপদ মজুমদারের অর্থায়নে ঈদ সামগ্রী বিতরণ সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংঘর্ষে ২ জন নিহত আহত ২০ একজন গ্রেফতার ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা এড. রফিকুল আলম চৌধুরী  ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সুমন ছাতকে খালের পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ বিক্রি করবো এমন বাবার মেয়ে আমি না : প্রধানমন্ত্রী ঈদুল আযহার অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোস্তফা কামাল ঈদুল আযহার অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিএস সুমন সরকার

মায়ের আত্মগোপনে মরিয়ম মান্নানও জড়িত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

মায়ের আত্মগোপনে মরিয়ম মান্নানও জড়িত

দেশের সময়২৪ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডেস্ক রিপোর্টঃ খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় ফরিদপুরে উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মায়ের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে প্রায় এক মাস ধরে তার সন্ধান করছিলেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। মরিয়মের কান্নার ছবি ছুঁয়ে যায় সবাইকে। নিউজ বাংলা ২৪

তবে রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা খুলনার দৌলতপুর থানার এসআই লুৎফুল হায়দার তাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ওসি আব্দুল ওহাব জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। তাকে খুলনায় পাঠানো হচ্ছে।

পুলিশের একটি দল রাত ২টার দিয়ে রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনার দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়।

পুলিশ জানায়, রহিমা বেগমের খুলনার বাড়িতে বেশ কয়েক বছর আগে কুদ্দুস মোল্লা নামে এক ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুরে। ওই বাড়িতেই রহিমা বেগম আত্মগোপনে ছিলেন।

দৌলতপুর থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রহিমা ও তার মেয়েরা অপহরণের নাটক সাজান। রহিমা আত্মগোপনে যাওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় যেকোনো নারীর মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করার পরিকল্পনাও সাজিয়ে রেখেছিলেন তার মেয়েরা।’

এর আগে গত শুক্রবার ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেছিলেন মরিয়ম মান্নানসহ রহিমা বেগমের তিন মেয়ে।

খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা। সেসময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা।

এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই অপহরণ মামলা করেন রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী।

খোঁজ না পাওয়ায় পরদিন রহিমার ছেলে মো. মিরাজ আল সাদী দৌলতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

রহিমা অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।

রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয়দের মামলা চলছে বলেও সে সময় জানানো হয়েছিল। রহিমার করা সেই মামলায় আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর রহিমা অপহরণ মামলা পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা এক নারীর মরদেহকে রহিমা বেগমের বলে দাবি করেন তার মেয়েরা। এদিন রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক এক পোস্টে বলেন, ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র।’

পরদিন সকালে নিখোঁজ রহিমার মেয়ে মরিয়ম মান্নান, মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার ফুলপুর থানায় পৌঁছান।

এ সময় পুলিশ অজ্ঞাত ওই নারীর ছবিসহ পরনে থাকা আলামতগুলো মেয়েদের দেখান। মরিয়ম মান্নান তার মায়ের ছবিসহ সালোয়ার-কামিজ দেখে দাবি করেন, এটিই তার মায়ের মরদেহ।

মরিয়ম মান্নান সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৭ দিন ধরে আমার মা নিখোঁজ। আমরা প্রতিনিয়ত মাকে খুঁজছি। এরই মধ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। সালোয়ার-কামিজ ছাড়াও ছবিতে আমার মায়ের শরীর, কপাল ও হাত দেখে মনে হয়েছে এটাই আমার মা।’

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে মরিয়মকে জানানো হয়, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মোতালেব চৌধুরী শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মরিয়মের মায়ের বয়স ৫৫ বছর। আমরা যে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করেছি, তার আনুমানিক বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছর মনে হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় মরদেহটি তার মায়ের নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।’

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বওলা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটির পরনে তখন গোলাপি রঙের সালোয়ার; গায়ে সুতির ছাপা গোলাপি, কালো-বেগুনি ও কমলা রঙের কামিজ এবং গলায় গোলাপি রঙের ওড়না প্যাঁচানো ছিল। পরে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে না পেরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ১২ সেপ্টেম্বর দাফন করা হয়। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা হয়েছে।’

ওসি বলেন, ‘মরিয়ম মান্নান ওই মরদেহটি তার মা রহিমার দাবি করলেও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। চূড়ান্তভাবে মরদেহ শনাক্তে মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করা প্রয়োজন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

মায়ের আত্মগোপনে মরিয়ম মান্নানও জড়িত

আপডেট সময় : ০৬:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

ডেস্ক রিপোর্টঃ খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় ফরিদপুরে উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মায়ের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে প্রায় এক মাস ধরে তার সন্ধান করছিলেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। মরিয়মের কান্নার ছবি ছুঁয়ে যায় সবাইকে। নিউজ বাংলা ২৪

তবে রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা খুলনার দৌলতপুর থানার এসআই লুৎফুল হায়দার তাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ওসি আব্দুল ওহাব জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। তাকে খুলনায় পাঠানো হচ্ছে।

পুলিশের একটি দল রাত ২টার দিয়ে রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনার দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়।

পুলিশ জানায়, রহিমা বেগমের খুলনার বাড়িতে বেশ কয়েক বছর আগে কুদ্দুস মোল্লা নামে এক ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুরে। ওই বাড়িতেই রহিমা বেগম আত্মগোপনে ছিলেন।

দৌলতপুর থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রহিমা ও তার মেয়েরা অপহরণের নাটক সাজান। রহিমা আত্মগোপনে যাওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় যেকোনো নারীর মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করার পরিকল্পনাও সাজিয়ে রেখেছিলেন তার মেয়েরা।’

এর আগে গত শুক্রবার ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেছিলেন মরিয়ম মান্নানসহ রহিমা বেগমের তিন মেয়ে।

খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা। সেসময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা।

এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই অপহরণ মামলা করেন রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী।

খোঁজ না পাওয়ায় পরদিন রহিমার ছেলে মো. মিরাজ আল সাদী দৌলতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

রহিমা অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।

রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয়দের মামলা চলছে বলেও সে সময় জানানো হয়েছিল। রহিমার করা সেই মামলায় আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর রহিমা অপহরণ মামলা পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা এক নারীর মরদেহকে রহিমা বেগমের বলে দাবি করেন তার মেয়েরা। এদিন রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক এক পোস্টে বলেন, ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র।’

পরদিন সকালে নিখোঁজ রহিমার মেয়ে মরিয়ম মান্নান, মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার ফুলপুর থানায় পৌঁছান।

এ সময় পুলিশ অজ্ঞাত ওই নারীর ছবিসহ পরনে থাকা আলামতগুলো মেয়েদের দেখান। মরিয়ম মান্নান তার মায়ের ছবিসহ সালোয়ার-কামিজ দেখে দাবি করেন, এটিই তার মায়ের মরদেহ।

মরিয়ম মান্নান সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৭ দিন ধরে আমার মা নিখোঁজ। আমরা প্রতিনিয়ত মাকে খুঁজছি। এরই মধ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। সালোয়ার-কামিজ ছাড়াও ছবিতে আমার মায়ের শরীর, কপাল ও হাত দেখে মনে হয়েছে এটাই আমার মা।’

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে মরিয়মকে জানানো হয়, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মোতালেব চৌধুরী শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মরিয়মের মায়ের বয়স ৫৫ বছর। আমরা যে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করেছি, তার আনুমানিক বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছর মনে হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় মরদেহটি তার মায়ের নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।’

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বওলা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটির পরনে তখন গোলাপি রঙের সালোয়ার; গায়ে সুতির ছাপা গোলাপি, কালো-বেগুনি ও কমলা রঙের কামিজ এবং গলায় গোলাপি রঙের ওড়না প্যাঁচানো ছিল। পরে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে না পেরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ১২ সেপ্টেম্বর দাফন করা হয়। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা হয়েছে।’

ওসি বলেন, ‘মরিয়ম মান্নান ওই মরদেহটি তার মা রহিমার দাবি করলেও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। চূড়ান্তভাবে মরদেহ শনাক্তে মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করা প্রয়োজন।’