ঢাকা ০৫:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৭ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ ::
ইউস্যাফের ঈদ আয়োজন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বরকামতা ইউনিয়নবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানালেন আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগ নেতা কালীপদ মজুমদারের অর্থায়নে ঈদ সামগ্রী বিতরণ সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংঘর্ষে ২ জন নিহত আহত ২০ একজন গ্রেফতার ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা এড. রফিকুল আলম চৌধুরী  ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সুমন ছাতকে খালের পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ বিক্রি করবো এমন বাবার মেয়ে আমি না : প্রধানমন্ত্রী ঈদুল আযহার অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোস্তফা কামাল ঈদুল আযহার অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিএস সুমন সরকার

সুনামগঞ্জে মায়ের হাতে খুন প্রতিবন্ধী মেয়ে

পিসি দাশ, সুনামগঞ্জ।
  • আপডেট সময় : ০৭:৪০:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩ ১৭৫ বার পড়া হয়েছে
দেশের সময়২৪ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মায়ের হাতে প্রতিবন্ধী মেয়ে খুনের ঘটনায় মাকে আটক করেছে সুনামগঞ্জের সদর থানা পুলিশ। জেলার পৌর শহরের হাজীপাড়া এলাকায় নিজের ঘরেই খুন হয়েছেন এই প্রতিবন্ধী তরুণী। ২২ বছর বয়সী মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ মা আছিয়া বেগমকে (৫৫) আটক করেছে। ফারজানা আক্তার নামের মেয়েটি জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। চলাফেরা করতে পারতেন না। প্রতিবন্ধী এই মেয়ের বসতঘরে তার ছোট ভাই মিফতাউল আলমও থাকতেন।

পুলিশ বলছে, মা জন্ম থেকে মেয়েটিকে লালনপালন করেছেন। তিনি না থাকলে মেয়েটির কী হবে-এ নিয়ে হতাশ ছিলেন। এই হতাশা থেকেই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। ঘটনার খবর পেয়েই সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

আছিয়া বেগেমর ছেলে নূর আলম জানান, তার বাবা আজিজুল ইসলাম দুই বছর আগে মারা গেছেন। তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে ফারজানা আক্তার দ্বিতীয়। ফারজানা জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। চলাফেরা করতে পারেন না। বিছানাতেই দিন কাটে তাঁর। মা তাকে অনেক কষ্টে লালন পালন করেছেন। বড় ভাই মামুন আহমদ ও নূর আলম নিজের সংসার নিয়ে আলাদা।

ছোট ভাই মিফতাউল আলম (২০) মা ও বোনকে নিয়ে একটি ঘরে থাকেন। ঘরের এক কক্ষে মা ও মেয়ে, অন্য একটি ছোট কক্ষে মিফতাউল থাকেন। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় মামুনের স্ত্রী শাশুরি আছিয়া বেগমের জন্য চা নিয়ে গিয়ে তার দরজায় ডাকাডাকি করেন।

একপর্যায়ে জানালা দিয়ে দেখতে পান মেঝেতে ফারজানা আক্তারের রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। পাশেই আছিয়া বেগম বসে আছেন। এরপর তিনি চিৎকার দিলে পাশের কক্ষ থেকে প্রথমে মিফতাউল যান, এরপর প্রতিবেশীরা গিয়ে বিষয়টি দেখে পুলিশকে খবর দেন। নূর আলম বলেন, আমি পাশেই পরিবার নিয়ে থাকতাম। মা ফারজানাকে নিয়ে কষ্টে ছিলেন।

এ ব্যাপারে আছিয়া বেগম কোনো কথা বলেন নি। ঘটনাস্থলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি বলেন, কিভাবে কি হয়েছে, আমি বলতে পারব না। এসময় তার শরীর কাঁপছিল।

ছোট ভাই মিফতাউল বলেন, আমি ঘুমে ছিলাম। ভাবীর ডাকাডাকিতে মায়ের কক্ষে গিয়ে ঘটনা দেখি। পরে ভাই নূর আলমকে ডেকে আনি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম সাবেরীন বলন, এদের পারিবারিক অবস্থা ভালো নয়। ছোট একটা টিনের ঘরে তারা বসবাস করে। প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে মা-ই দেখভাল করতেন। মেয়েটির সব কিছু মা করতেন।

সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মা আছিয়া বেগমকে আটক করা হয়েছে। একটি রক্তমাখা ছোরাও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদক বললেন, মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ্ বললেন, প্রতিবন্ধী মেয়েটির মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে মা হতাশায় ছিলেন। সেই অবস্থায় এমনটি ঘটাতে পারেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

সুনামগঞ্জে মায়ের হাতে খুন প্রতিবন্ধী মেয়ে

আপডেট সময় : ০৭:৪০:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩

মায়ের হাতে প্রতিবন্ধী মেয়ে খুনের ঘটনায় মাকে আটক করেছে সুনামগঞ্জের সদর থানা পুলিশ। জেলার পৌর শহরের হাজীপাড়া এলাকায় নিজের ঘরেই খুন হয়েছেন এই প্রতিবন্ধী তরুণী। ২২ বছর বয়সী মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ মা আছিয়া বেগমকে (৫৫) আটক করেছে। ফারজানা আক্তার নামের মেয়েটি জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। চলাফেরা করতে পারতেন না। প্রতিবন্ধী এই মেয়ের বসতঘরে তার ছোট ভাই মিফতাউল আলমও থাকতেন।

পুলিশ বলছে, মা জন্ম থেকে মেয়েটিকে লালনপালন করেছেন। তিনি না থাকলে মেয়েটির কী হবে-এ নিয়ে হতাশ ছিলেন। এই হতাশা থেকেই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। ঘটনার খবর পেয়েই সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

আছিয়া বেগেমর ছেলে নূর আলম জানান, তার বাবা আজিজুল ইসলাম দুই বছর আগে মারা গেছেন। তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে ফারজানা আক্তার দ্বিতীয়। ফারজানা জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। চলাফেরা করতে পারেন না। বিছানাতেই দিন কাটে তাঁর। মা তাকে অনেক কষ্টে লালন পালন করেছেন। বড় ভাই মামুন আহমদ ও নূর আলম নিজের সংসার নিয়ে আলাদা।

ছোট ভাই মিফতাউল আলম (২০) মা ও বোনকে নিয়ে একটি ঘরে থাকেন। ঘরের এক কক্ষে মা ও মেয়ে, অন্য একটি ছোট কক্ষে মিফতাউল থাকেন। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় মামুনের স্ত্রী শাশুরি আছিয়া বেগমের জন্য চা নিয়ে গিয়ে তার দরজায় ডাকাডাকি করেন।

একপর্যায়ে জানালা দিয়ে দেখতে পান মেঝেতে ফারজানা আক্তারের রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। পাশেই আছিয়া বেগম বসে আছেন। এরপর তিনি চিৎকার দিলে পাশের কক্ষ থেকে প্রথমে মিফতাউল যান, এরপর প্রতিবেশীরা গিয়ে বিষয়টি দেখে পুলিশকে খবর দেন। নূর আলম বলেন, আমি পাশেই পরিবার নিয়ে থাকতাম। মা ফারজানাকে নিয়ে কষ্টে ছিলেন।

এ ব্যাপারে আছিয়া বেগম কোনো কথা বলেন নি। ঘটনাস্থলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি বলেন, কিভাবে কি হয়েছে, আমি বলতে পারব না। এসময় তার শরীর কাঁপছিল।

ছোট ভাই মিফতাউল বলেন, আমি ঘুমে ছিলাম। ভাবীর ডাকাডাকিতে মায়ের কক্ষে গিয়ে ঘটনা দেখি। পরে ভাই নূর আলমকে ডেকে আনি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম সাবেরীন বলন, এদের পারিবারিক অবস্থা ভালো নয়। ছোট একটা টিনের ঘরে তারা বসবাস করে। প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে মা-ই দেখভাল করতেন। মেয়েটির সব কিছু মা করতেন।

সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মা আছিয়া বেগমকে আটক করা হয়েছে। একটি রক্তমাখা ছোরাও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদক বললেন, মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ্ বললেন, প্রতিবন্ধী মেয়েটির মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে মা হতাশায় ছিলেন। সেই অবস্থায় এমনটি ঘটাতে পারেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।