ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ ::
ইউস্যাফের ঈদ আয়োজন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বরকামতা ইউনিয়নবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানালেন আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগ নেতা কালীপদ মজুমদারের অর্থায়নে ঈদ সামগ্রী বিতরণ সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংঘর্ষে ২ জন নিহত আহত ২০ একজন গ্রেফতার ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা এড. রফিকুল আলম চৌধুরী  ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সুমন ছাতকে খালের পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ বিক্রি করবো এমন বাবার মেয়ে আমি না : প্রধানমন্ত্রী ঈদুল আযহার অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোস্তফা কামাল ঈদুল আযহার অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিএস সুমন সরকার

নোয়াখালীতে দুলা ভাইয়ের ধর্ষণেে শালিকা অন্তস্বত্ত্বা পরে গর্ভপাত মামলার তদন্তে সিআইডি 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৬:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ ২০২২ ১১৭ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীতে দুলা ভাইয়ের ধর্ষণেে শালিকা অন্তস্বত্ত্বা পরে গর্ভপাত মামলার তদন্তে সিআইডি 

দেশের সময়২৪ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শুল্লুকিয়া গ্রামে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী নিজ ভগ্নিপতির লালসার শিকার হয়ে অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়লে রাতের আধাঁরে ওই কিশোরীর গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে।

এই ঘটনায় প্রতিবাদ করায় এক পল্লী চিকিৎসককে ফার্মেসী থেকে তুলে নিয়ে বেদম মারধর করেছে ভিকটিমের ভগ্নিপতি ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।

ঘটনায় আহত পল্লী চিকিৎসক মো. বেলাল হোসেন গত বুধবার (০২ মার্চ) নোয়াখালীর সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ০১ নম্বর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালতের বিচারক মোসলেহ উদ্দিন মিজান মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডি নোয়াখালীকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন।

মামলার বাদি বেলাল হোসেন বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে নরুপাটোয়ারীর হাট বাজারে তার পপুলার ফার্মেসীতে ভিকটিম পেট ব্যাথা নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসেন। ভিকটিমের গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা মনে করে তিনি ভিকটিমকে গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ের ইনজেকশান প্রয়োগ করেন।

এতে তার পেট ব্যাথা বেড়ে যাওয়ায় অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা জানতে চাইলে ভিকটিম জানায় সে অন্তস্বত্ত্বা। ভিকটিম অবিবাহিত হওয়ায় এতে পল্লী চিকিৎসক বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করে এটা কিভাবে সম্ভব? পরে ভিকটিম জানায়, পূর্ব শুল্লুকিয়া গ্রামের মনিরের ছেলে তার দুলাভাই মো. সোহাগ ভিকটিমকে ধর্ষণ করলে সে অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে।

পল্লী চিকিৎসক বেলাল আরো বলেন, তিনি ঘটনাটি মুঠোফোনে ভিকটিমের চাচা রতন এবং ভগ্নিপতি অভিযুক্ত সোহাগকে জানালে তারা তাকে অনুরোধ করেন ভিকটিমকে একটি সিএনজি যোগে সোনাপুর সেবা ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে পাঠাতে। পরে ভিকটিমকে ওই ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে পাঠালে সেখানে ভিকটিমের শারীরিক পরীক্ষার পর জানা যায় ভিকটিম ৩৪ সপ্তাহের অন্তস্বত্ত্বা।

ভিকটিমের শারীরিক পরীক্ষার পরই সেখানে হাজির হন অভিযুক্ত সোহাগ। তিনি পল্লী চিকিৎসক বেলালকে ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু না জানাতে হুমকি দিয়ে ভিকটিমকে সেখান থেকে নিয়ে রাতের আধাঁরে অজ্ঞাত হাসপাতাল/ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটায়।

ঘটানর বিষয়ে প্রতিবাদ করলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে পল্লী চিকিৎসক বেলাল ও তার ফার্মেসীতে আসা রোগী ইটভাটা শ্রমিক ওমর ফারুককে ফার্মেসী থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তুলে নেয় অভিযুক্ত সোহাগ ও ভিকটিমের চাচা রতন। পরে তাদেরকে ভিকটিমের বাড়িতে নিয়ে টাকার বিনিময়ে ভিকটিমের বক্তব্যের ফোন রেকর্ড এবং শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট দিয়ে দেওয়ার চাপ দেয়।

এতে পল্লী চিকিৎসক বেলাল রাজি না হওয়ায় তাদের দুইজনকে বেদম পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এই ঘটনায় পল্লী চিকিৎসক মো. বেলাল হোসেন বাদি হয়ে গত ২ মার্চ অভিযুক্ত সোহাগ ও ভিকটিমের চাচা রতননের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

ভিকটিমের অন্তস্বত্ত্বার বিষয়ে প্রকাশ হওয়া একটি ফোন রেকর্ডে শুনা যায়, ভিকটিমের সাথে তার দুলাভাই সোহাগ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলায় ভিকটিম অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে ক্রিমির ওষুধ খাওয়ার পরও বাচ্চা নষ্ট হয়নি। স্থানীয় সমাজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজুল হক বলেন, ধর্ষণ এবং শিশু হত্যার মতো অপরাধকে ধামাচাপা দিতে পল্লী চিকিৎসক বেলাল ও একজন ইটভাটার শ্রমিককে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছে।

বিষয়টি অমানবিক। এই ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত সোহাগের বিচার হওয়া উচিৎ। সোনাপুর সেবা ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের ডাক্তার শরীফুল ইসলাম শরীফ জানান, ওই মেয়েটি তার আলট্রাসনোগ্রাফী রিপোর্টে ৩৪ সপ্তাহের অন্তস্বত্ত্বার কথা শুনে বিচলিত হয়ে পড়ে।

এসময় তাকে বিচলিত হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তার এখনো বিয়েই হয়নি। এওজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন জানান, ঘটনাটি তিনি জানার পর ভিকটিমের পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেন। এর বাহিরে তিনি কিছুই জানেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

নোয়াখালীতে দুলা ভাইয়ের ধর্ষণেে শালিকা অন্তস্বত্ত্বা পরে গর্ভপাত মামলার তদন্তে সিআইডি 

আপডেট সময় : ০৯:২৬:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ ২০২২

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শুল্লুকিয়া গ্রামে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী নিজ ভগ্নিপতির লালসার শিকার হয়ে অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়লে রাতের আধাঁরে ওই কিশোরীর গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে।

এই ঘটনায় প্রতিবাদ করায় এক পল্লী চিকিৎসককে ফার্মেসী থেকে তুলে নিয়ে বেদম মারধর করেছে ভিকটিমের ভগ্নিপতি ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।

ঘটনায় আহত পল্লী চিকিৎসক মো. বেলাল হোসেন গত বুধবার (০২ মার্চ) নোয়াখালীর সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ০১ নম্বর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালতের বিচারক মোসলেহ উদ্দিন মিজান মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডি নোয়াখালীকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন।

মামলার বাদি বেলাল হোসেন বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে নরুপাটোয়ারীর হাট বাজারে তার পপুলার ফার্মেসীতে ভিকটিম পেট ব্যাথা নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসেন। ভিকটিমের গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা মনে করে তিনি ভিকটিমকে গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ের ইনজেকশান প্রয়োগ করেন।

এতে তার পেট ব্যাথা বেড়ে যাওয়ায় অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা জানতে চাইলে ভিকটিম জানায় সে অন্তস্বত্ত্বা। ভিকটিম অবিবাহিত হওয়ায় এতে পল্লী চিকিৎসক বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করে এটা কিভাবে সম্ভব? পরে ভিকটিম জানায়, পূর্ব শুল্লুকিয়া গ্রামের মনিরের ছেলে তার দুলাভাই মো. সোহাগ ভিকটিমকে ধর্ষণ করলে সে অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে।

পল্লী চিকিৎসক বেলাল আরো বলেন, তিনি ঘটনাটি মুঠোফোনে ভিকটিমের চাচা রতন এবং ভগ্নিপতি অভিযুক্ত সোহাগকে জানালে তারা তাকে অনুরোধ করেন ভিকটিমকে একটি সিএনজি যোগে সোনাপুর সেবা ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে পাঠাতে। পরে ভিকটিমকে ওই ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে পাঠালে সেখানে ভিকটিমের শারীরিক পরীক্ষার পর জানা যায় ভিকটিম ৩৪ সপ্তাহের অন্তস্বত্ত্বা।

ভিকটিমের শারীরিক পরীক্ষার পরই সেখানে হাজির হন অভিযুক্ত সোহাগ। তিনি পল্লী চিকিৎসক বেলালকে ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু না জানাতে হুমকি দিয়ে ভিকটিমকে সেখান থেকে নিয়ে রাতের আধাঁরে অজ্ঞাত হাসপাতাল/ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটায়।

ঘটানর বিষয়ে প্রতিবাদ করলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে পল্লী চিকিৎসক বেলাল ও তার ফার্মেসীতে আসা রোগী ইটভাটা শ্রমিক ওমর ফারুককে ফার্মেসী থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তুলে নেয় অভিযুক্ত সোহাগ ও ভিকটিমের চাচা রতন। পরে তাদেরকে ভিকটিমের বাড়িতে নিয়ে টাকার বিনিময়ে ভিকটিমের বক্তব্যের ফোন রেকর্ড এবং শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট দিয়ে দেওয়ার চাপ দেয়।

এতে পল্লী চিকিৎসক বেলাল রাজি না হওয়ায় তাদের দুইজনকে বেদম পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এই ঘটনায় পল্লী চিকিৎসক মো. বেলাল হোসেন বাদি হয়ে গত ২ মার্চ অভিযুক্ত সোহাগ ও ভিকটিমের চাচা রতননের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

ভিকটিমের অন্তস্বত্ত্বার বিষয়ে প্রকাশ হওয়া একটি ফোন রেকর্ডে শুনা যায়, ভিকটিমের সাথে তার দুলাভাই সোহাগ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলায় ভিকটিম অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে ক্রিমির ওষুধ খাওয়ার পরও বাচ্চা নষ্ট হয়নি। স্থানীয় সমাজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজুল হক বলেন, ধর্ষণ এবং শিশু হত্যার মতো অপরাধকে ধামাচাপা দিতে পল্লী চিকিৎসক বেলাল ও একজন ইটভাটার শ্রমিককে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছে।

বিষয়টি অমানবিক। এই ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত সোহাগের বিচার হওয়া উচিৎ। সোনাপুর সেবা ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের ডাক্তার শরীফুল ইসলাম শরীফ জানান, ওই মেয়েটি তার আলট্রাসনোগ্রাফী রিপোর্টে ৩৪ সপ্তাহের অন্তস্বত্ত্বার কথা শুনে বিচলিত হয়ে পড়ে।

এসময় তাকে বিচলিত হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তার এখনো বিয়েই হয়নি। এওজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন জানান, ঘটনাটি তিনি জানার পর ভিকটিমের পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেন। এর বাহিরে তিনি কিছুই জানেন না।